অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় পুলিশ রিমান্ড শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে ইয়াবা খাইয়ে ছাত্রী ধর্ষণে সহায়তাকরা অন্যতম আসামী দীপক জয়ধর।
আদালতসূত্রে জানা গেছে, দু’দিন পুলিশ রিমান্ড শেষে বুধবার শেষ বিকেলের আদালতে স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী দীপক জয়ধর বরিশাল অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিহাবুল ইসলাম এর আদালতে নেশা করিয়ে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। ওই মামলায় ১নং আসামী দীপক, তার মা পুষ্প জয়ধর ও স্ত্রী কচি জয়ধরও জেলহাজতে রয়েছে। আদালতের নির্দেশে মা পুষ্প রানী এবং স্ত্রী কচি রানীকেও দু’দিন জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার সত্যতা স্বীকার করেছেন মামলার কতন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহজাহান। দীপক আগৈলঝাড়া উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের দীজেন জয়ধরের ছেলে।
সূত্র জানায়, দীপকের বাহাদুরপুর গ্রামের বাড়ির পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা তাপস শীলের সাথে ঘটনার দিন রাতে মাদকের কাস্টমার হিসেবে দীপকের বাড়িতে অবস্থান নেয় মামলায় অজ্ঞাতনামা সেই ধর্র্ষক গৌরনদী থানার কুদ্দুস ফকিরের ছেলে কাওছার ফকির। তাপস টরকী বন্দরে সেলুন ব্যবসার আড়ালে এলাকার দীপকসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে পাইকারী মাদক বিক্রি করে আসছিল। সেলুন ব্যবসার সুবাদে কাওছারের সাথে তাপসের সখ্যতা গড়ে ওঠে। দীপকের পরিবারও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে দীপকের স্ত্রীও দেহ ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার। তাপসের সাথে সখ্যতার সূত্র ধরে ঘটনার দিন ২৯জুলাই রাতে ধর্ষণের শিকার হওয়া পাশের বাড়ির স্কুলছাত্রীকে বই পড়ার সময় রাত ১১টার দিকে দীপক ও তার স্ত্রী কচি ফোন করে কৌশলে দীপকের ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্বে থেকে তাপস শীল, তার কাস্টমার বন্ধু কাওছার, গৌরনদীর নন্দনপট্টি গ্রামের শফি মৃধার ছেলে সেন্টু মৃধা উপস্থিত ছিল। এসময় দীপকের ঘরে অন্যান্যদের সাথে ওই স্কুলছাত্রীকেও ইয়াবা খাওয়ানো হয়। ইয়াবা খেয়ে ওই ছাত্রী বেসামাল হয়ে পরলে অন্যান্যরা ঘর থেকে বের হয়ে যায়। এই সুযোগে কাওছার তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ধর্ষিতার জ্ঞান ফিরে ডাকচিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে দীপক, তার মা ও স্ত্রীকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। এসময় কৌশলে তাপস, কাওছার ও সেন্টু পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
ধর্ষিতা ওই ছাত্রী বাহাদুপুর গ্রামের তার মামা বাড়িতে থেকে বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে লেখাপড়া করত। তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী কোটালীপাড়া উপজেলার জহরেরকান্দি গ্রামে।
ওই রাতে ডিউটিরত এএসআই মিন্টু লাল হীরা ঘটনাস্থল গিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করেন। এসময় তিনি ধর্ষণে সহায়তা করার অপরাধে দীপক, তার মা পুষ্প জয়ধর, স্ত্রী কচি জয়ধরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। ঘটনার পর দিন ৩০ জুলাই ধর্ষিতা ওই স্কুল ছাত্রী বাদী হয়ে তাপসের বন্ধু অজ্ঞাতনামা ধর্ষক, ধর্ষণের সহয়তার জন্য দীপক,তার মা পুষ্প রানী, স্ত্রী কচি রানী ও তাপস শীলকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন, মামলা নং- ১১ (৩০-০৭-২০১৭)।